|| শোনা যাক, যেসবের কিছুই তুমি জানোনা ||
... ... ....
মাঝরাতে বুকটা কেঁপে উঠেছিলো যেবার
আমি একমুখ সন্ধ্যা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম
তোমাদের তেতলার বাসাটার রাস্তায়।
সেসবের কিছুই তুমি জানোনা...
.
বিরাট বিরাট খামের ভিতর বদ্ধ স্নিগ্ধতা,
আর ধৈর্যচ্যুত কপালের ঘাম যেনো
তোমার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিলো চুপচাপ।
আর আমি দাড়িয়ে দেখছিলাম বারান্দায় টব-ফুলের পাতার কাঁপন,
শুকোতে দেয়া জামার দোমড়ানো ভাজ,
তোমার রুমের উঁকি দেয়া সিলিং ফ্যান,
একপায়ে ভর দিয়ে দাড়িয়ে থাকা আমার জুতোজোড়া।
... ... ...
সেবারও মেলাদিন দেখা হয়নি আমাদের।
নাহোক, রোজ যে দেখতেই হবে তোমায় এমনটাতো না!
চারিপাশে রোজ কত মানুষ মরছে। ঘর থেকে মেয়েরা বের হলেই ফিরছে ধর্ষিতা হয়ে।
তাই আমিই বরং চেয়েছিলাম, দেখা না হোক।
প্রেমিক হয়ে তোমায় না দেখার পণ করাটা ছিলো,
সরকারের প্রতি ছুড়ে দেয়া আমার নাগরিক ধীক্কার।
সেসবের কিছুই তুমি জানোনা...
.
অবশ্য একথাও সত্য,
মুঠোভর্তি অবসন্নতায় নতুনভাবে তোমায় উপভোগের লোভটাও সামলাতে পারিনি।
বিনিময়ে মিলেছিলো কিছু প্রিভিলেইজ-
রাতজেগে তোমাকে নিয়ে ভাবার অবকাশ,
বিছানায় বসে পা ঝুলিয়ে থাকার সময়,
দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে গুনগুনানো লালাবাই,
আর মন খারাপের ভান করে নিজের হাত চেপে ধরে হুহু করে কান্নাকাটির চেষ্টা।
যেনো আমি মরে যাচ্ছি তোমাকে দেখতে না পাওয়ার কষ্টে,
তোমার হাসি, তোমার চোখ, তোমার ঠোঁট না ছোঁয়ার ভ্রষ্টে।
... ... ...
আমি আবার প্রচন্ড ভীতু জানোই।
একদিকে ছাত্র পেটাচ্ছে সরকার,
গলা কাঁটা লাশে ভরে যাচ্ছে এলাকার ড্রেন;
ওদিকে বাবার একার ইনকামে টানাটানির সংসার,
তবুও আমি মাসের বাকি টিউশনের বেতনটা
খুঁজতে বারবার ঢোক গিলছি।
সেসবের কিছুই তুমি জানোনা...
.
তোমার জন্য যে আমি একতোড়া টিউলিপ হাতে দাড়াবো কলেজগেইটে,
এমন একটা চিন্তাও যেনো আমার কাছে পারমাণবিক পুশ-বাটনের মতন ভয়াবহ।
ছোটো করে ফেলা প্রতিটা দীর্ঘশ্বাস যেনো,
শহরের সবকটা পুঁজিবাদী ফুলব্যবসায়ীর প্রতি আমার দলাপাকানো হাহাকার।
অবশ্য তুমিও যে এসব ম্যাটেরিয়ালিস্টিক প্রেমে বড্ড মাথা ঘামাও তা না।
তুমি কেবল চাইতে আমি তোমার কথাগুলো যেনো চুপচাপ শুনি,
মাঝেমধ্যে তোমার হাতের আঙুল নিয়ে মটকা ফুটাই,
বা কথার দমক থামিয়ে দিয়ে হুট করে মাঝরাস্তায় ডানগালে বসাই একটা অব্যর্থ চুমু।
... ... ...
প্রণয়ের ৪বছরের মাথায় এসে আজোও যেনো আমি নাজেহাল এক কালিম্বা।
তোমাকে মিস করতে থাকা প্রতিটা ফুঁ-তেই কেঁপে উঠে আমার বাড়ন্ত পৌরুষ।
দারুণ এক বিদ্রোহী মনোভাব চেপে রেখেই
ছুটে যেতে চাই তোমার বাসার গলিটায়।
তোমার বাড়ির প্রজাতান্ত্রিক দাড়োয়ানকে উপেক্ষা করার ভীষণ রকম একটা দুঃসাহসবোধ যে কাজ করেছে কতবার,
সেসবের কিছুই তুমি জানোনা...
.
আমিও যে সবটা জেনে বসে আছি তেমনটাও না।
তাই ভাবলাম বরং একটা কবিতা লেখা যাক আজকের এই দিনটাকে নিয়ে।
বছর তিনেক আগে হারিয়ে যাওয়া একটা ভাজকরা সাদা কাগজের মতন,
শোনা যাক একটা কবিতার আর্তনাদ।
.
শুভকামনা জানানো যাক সকল পেশাদারী প্রেমিক-অপ্রেমিকদের।
শুভকামনা জানাই, আমার পার্ক পাহাড়া দেয়া সরকার।
শুভকামনা তোকেও, আমার গরিবী সুখী প্রেম।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্যে, আপনাকে আমার দরকার।
... ... ...
লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ.
তারিখঃ ০২০২/৫০/১১.


I am really surprised by the quality of your constant posts.
ReplyDeleteThanks. It means a lot to me. Take my love <3
Delete