জনস্বার্থে ফেরিওয়ালা


... ... ...

একদিন ভোর হতে হতেই ঘুমিয়ে যাবো আমি।
ঘুমন্ত শহুরে নাগরিকদের মত অপরাধ মেনে নিয়ে বাঁচতে শিখে যাবো।
শাদা শার্টের হাতায় বেখেয়ালি কলমের দাগ মতন,
অগোছালো প্রেমিক বানিয়ে দিবো সবাইকে একদিন।

বাইফোকাল ল্যান্সের চশমা এঁটে, কাঁধে দায়িত্ব নিবো আমি।
হাতভর্তি থাকবে আমার ফানুশ, কাঁচের চুড়ি আর চাকুরীর পত্রিকা,
তাই নিয়ে ভোরবেলা বেরিয়ে পড়বো একদিন।

.."একটা ফানুশ ৫০ আর দুটো ফানুশ ৮০ কেনো?"...
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই বেলাকেঁটে যাবে আমার, বিক্রি হবেনা একটা চুড়িও।
কিন্তু দায়িত্ববান বেকারদের বদৌলতে ততক্ষনে খালি হয়ে যাবে পত্রিকার ঝুলি!

এশহরে রোজ হাজার যুবক 'কাজ নেই, কাজ নেই' বলে বেকার ঘুরে বেড়ায়,
তবু একটা ফানুশ কিনে উড়িয়ে দেয়ার মত সময় তাদের নেই কেনো?

... ... ...

তারপর আমি গম্ভীরভাবে হাটতে থাকবো রাস্তার মোড়ের পুলিশবক্স বরাবর।
একগোছা চুড়ি কিনতে বলব তাদের।
তারা রোজ জঙ্গিখোঁজের নাম দিয়ে যতগুলো প্রেমবাহী রিক্সার হুড তুলেছে তার প্রতিদান চেয়ে বসতেও পারি!
অথবা আরোও জিজ্ঞাস করতে পারি, কিভাবে তারা খালি ব্যাগের ভিতর হাত ঢুকিয়ে গাঁজার পুটলি বের করে!

- "জাদুটা আমাকেও শেখান প্লিজ!"
কথা দিচ্ছি, জাদুটা শেখার পর চাকুরির পত্রিকার বদলে আমি গাঁজা বিক্রি শুরু করবো।

অচিরেই চাকুরি না পেয়ে পত্রিকা কেনা যুবকগুলো যখন আবার আমার কাছে গাঁজা কিনতে আসবে,
প্রত্যেককে তখন ১টি ফানুশ ধরিয়ে বলবো,
- "ঘুমন্ত শহরের এক ভোররাতে সবাই মিলে ফানুশ উড়িও,
যে শহর তোমাদের চাকুরি দেয়নি,
যে শহর তোমাদের জাগিয়ে রাখে রাতে,
সে শহরে কখনোই কোনো গোছালো প্রেমিক জন্মায়না।
সে শহরে কখনোই কোনো সুস্থ মানুষ বাঁচেনা"...

একদিন ভোরবেলা আমি ঠিকই ঘুমিয়ে যাবো।
ঘুমভেঙে সকালে তোমরা দেখবে গাঁজার ধোয়া আর স্বচ্ছ ফানুশে ঢেকে গেছে গোটা শহর..
সমস্ত অগোছালো প্রেমিকরা সেদিন খুব জোরেজোরে দরজায় ঘা দিয়ে আমায় খুঁজবে,
কারণ কাঁচের চুড়িগুলো অবিক্রিত সব।
শহুরে প্রেমিকাদের অনেক চুড়ি চাই...
অনেক চুড়ি...

😶

লেখা: রোড নং ছত্রিশ.
তারিখ: ৭১০২/৯০/৭১.

No comments

Powered by Blogger.